চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে উপজেলায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আট আসামীকেই অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার ১১ মাস পর মঙ্গলবার (২ মে) চট্টগ্রাম আদালতে দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। প্রতিবেদনে মামলার আসামীর কারো অবহেলা খুঁজে পায়নি পুলিশ।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের জন্য কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল না। এ কারণে ডিপোর আট কর্মকর্তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন মাহমুদ বলেন, সীতাকুন্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আগামী সোমবার (৮ মে) চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের ওপর আদালতে শুনানি হতে পারে।
এর আগে এই দুর্ঘটনার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএম ডিপোতে দুর্ঘটনার জন্য মালিকপক্ষ ও তদারকিতে নিয়োজিতরা দায় এড়াতে পারেন না। প্রতিবেদনে কর্মকর্তা ও তদারকিতে নিয়োজিতদের দায় নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আট আসামীর অব্যাহতির সুপারিশ করায় আগের তদন্ত কমিটির রিপোর্টকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। নাশকতা কিংবা অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্তে পাওয়া যায়নি। এই বিস্ফোরণ একটি দুর্ঘটনা। মালিক কিংবা অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলাও এতে পাওয়া যায়নি। এ কারণে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুন্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণে ৫১ জন নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক। আহতদের চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৭ জুন রাতে সীতাকুন্ড থানার এসআই আশরাফ সিদ্দিকী বাদী হয়ে ডিপোর আট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
মামলায় ডিপোর কর্মচারীদের আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নাজমুল আক্তার খান, উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) নুরুল আক্তার খান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) খালেদুর রহমান, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস উল্লাহ, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (প্রশাসন) নাছির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ, ডিপোর শেড ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডিপো ইনচার্জ নজরুল ইসলাম। এদের সবাইকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।